সম্প্রসারণশীল নাচ

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – সম্প্রসারণশীল নাচ।যা “সারা বিশ্ব জুড়ে নাচ” খন্ডের অন্তর্ভুক্ত।

সম্প্রসারণশীল নাচ

 

সম্প্রসারণশীল নাচ

 

শরীরের সমন্বয়হীন খেঁচুনি নাচের ঠিক প্রত্যক্ষ বিপরীত কি হতে পারে সেটা আমরা বুঝতে চেষ্টা করি তবে দেখা যাবে নাচ অদ্যম উৎসাহে যান্ত্রিক অভিব্যক্তিতে এবং যেটা নাচুয়ে ও দর্শকের জীবনবোধের উচ্চ মূল্যায়ন থেকে উৎসরিত সেট ধর্মীয় পদ্ধতির। বহুকালের প্রচলিত অধিকার থেকে হয়ে থাকে বা না থাকে সেটা কোন বিবেচনার বিষয় হয় না কেঁচুনি নাচের মত হর্ষোচ্ছাস ও প্রফুল্লতা উদ্দীপনার অংশ।

দুই ধরনের নাচের মধ্যে মানুষের শারীরিক সীমাবদ্ধতা অতিক্রান্ত হয়েছে এবং অবচেতন মন মুক্তি পেয়েছে পার্থক্য এটাই সমন্বয়হীন নাচে শরীরের মাংস ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য করে সম্পন্ন করা হয়, সমন্বয়যুক্ত নাচে এটা আরো উন্নত পর্যায়ে নেয়া তার ছাড়া উপর নিচে গতিসঞ্চালন করা হয়। প্রত্যেক নাচের ভঙ্গিমার জন্য ছন্দবদ্ধ তালাঘাত উদ্দীপনা প্রাপ্তির যথার্থই অতি প্রয়োজনীয় উপায়।

যেমন কেউ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারে উদ্বেগ শূন্য ইচ্ছাশক্তিই ক্রিয়াশীল। “দেহ ভঙ্গিমাগুলি আপনার আপনি পরিলক্ষিত হয় যেখানে সেখানে নিজের কিছু করার থাকে না। এইভাবে আত্মসচেতনতা সম্পূর্ণ লুপ্ত হয় এবং আদিম ইচ্ছার বিনাশ ঘটে।

সেইজন্য ছন্দবন্ধগতি মানেেষর তাৎপর্যপূর্ণ জীবনের বাহন ও প্রযু মেজাজ উদ্ভাবক হয়ে উঠে”। সমন্বিত নাচ শুধুমাত্র ছন্দে উত্তরণ ঘটায় না (বিট) ভালাঘাতের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের সকল অংশের ভঙ্গিমা একত্রে হবার ডাক দেয় যার ফলে ছন্দ সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে থাকে এবং হর্ষোৎফুল্ল নাচের বৈশিষ্ট্য আরো প্রগাঢ় হয়।

পদাঘাত বিশ্বজনীন। মানবজাতির সর্বনিম্নস্তর থেকে তথা- (এপ) বন-মানুষ থেকে এটা উচ্চ সাংস্কৃতির অসভ্য নাচে পৌঁছে এবং আমাদের শিশুদের গোলা হয়ে নাচার মধ্যেও। এটা নিশ্চিত যে, এটা ছন্দবদ্ধগতিকেই শুধু প্রতিফলিত করে না। সাজোরে পদাঘাত যান্ত্রিক প্রকাশের ব্যতিক্রমধর্মী অতিশয্য অথবা মাটিতে হালকা প্রতিঘাত প্রত্যক্ষভাবে মাধ্যকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ।

হাঁটু ভাজন (বেন্ড) যেমন বিশ্বজনীন। এটা দুই আকৃতিতে দৃশ্যমান হয় যেমন স্থীর অবস্থানে এবং ছন্দবদ্ধ দেহ ভঙ্গিমায় । এখানেও স্থিতিস্থাপক অর্ধভাঙ্গা জয়েন্টই (কাজী) মনে হয় প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য। স্কুয়াট নাচ মূলতঃ জীব-জন্তুর নাচ হয়েও ফ্রাস্কিস, রেনিস ও ইংরেজদের লোক-পোশাকে সংরক্ষিত আছে এবং হাঁটুর নিচু বেন্ড সুইসদের নাচে বিরাজমান।

আমরা পরে আরো বিভিন্ন প্রকার নাচের পজিশন ও ভঙ্গিমা সম্পর্কে বলব যেটা যদিও বিশ্বজনীন না হলেও অধিকাংশ বৈচিত্র্যময় নাচের উদ্দীপ্ত বৈশিষ্ট্যে লক্ষ্য করা যায়। আপাততঃ আমরা একটা ভঙ্গিমা উল্লেখ করব, যেমন নাচের সময় গতি সঞ্চালনে উত্তেজক, শান্ত থেকে আকার ইঙ্গিতে প্রকাশ করে এবং এমনকি প্রচন্ড হঠকারী আবেগের বশবর্তীতেও শুরু থেকে গম্ভীর থাকে যা স্ট্রীটা নামে পরিচিত।

যদিও তাদের-এইসব সাধারণ গুণাবলী সমন্বিত নাচের সংখ্যা ও প্রকারভেদ এত বেশী যে, তাদের সন্তোষজসক জরীপ করতে গেলে হতাশ না হয়ে উপায় থাকে না। যদি এটা তাই না হত সেখানে প্রধানতঃ দুই ধরনের দেহ ভঙ্গিমা সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হত। আমরা যতই অধিক যৌনতা, লোকজন, জনগোষ্ঠী এবং ব্যক্তিত্ব দেখে থাকি তবুও আমরা বিভক্ত করতে পারি এইভাবে যেঃ-তাদের নামকরণ হল “সম্প্রসারণশীল ভঙ্গিমা এবং কেন্দ্রীভূত ভঙ্গিমা”

সম্প্রসারণশীল নাচ শক্তিশালী উদ্দীপনার প্রতিক্রিয়ায় বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। এটা প্রায় সম্পূর্ণভাবে লড়াইয়ের প্রতিরূপ একটা শক্ত আইনের বিরুদ্ধে বন্য বিদ্রোহ। শরীরের প্রত্যেক মাংসপেশী টান করে বাঁধা অবস্থায় শরীরকে উর্ধমুখি নিক্ষেপ করে এমনভাবে যেন শরীরই উঠে, উঠান হয় না। পায়ের গোড়ালী, পাতা উপরে তোলা হয় শুধু পায়ের অগ্রভাগ একটু বাকী থাকে।

এক পা অন্য পায়ের হাঁটুর এত উপরে উঠান হয় যে নাচ এক পায়েই চলতে থাকে। ধড় পিছনে বাঁকান, মুখমণ্ডল আকাশের দিকে, বাহুদ্বয় উপরের দিকে ছড়ান। মাটির সঙ্গে শেষ ক্ষীণ স্পর্শও থাকে না, ভয়ের সাথে আস্তে লাফ দেয়, দৃঢ়ভাবে আকস্মিক লম্ফঝম্ফ করে। আমরা ইউরোপীয় বৈশিষ্ট্যের স্থাপত্যকলা সম্বন্ধে মনে করলে, এর চেয়ে প্রফুল্লজনক আর কিছু জন্মায় নি, একমাত্র গথিক। এটা খুবই গৌরবের এবং পার্থিক বোঝার অস্বীকৃতি, খাড়া এক বাঁধাহীন উর্ধমুখির নিশ্চিত বিজয় ।

ছড়ান নাচের চূড়ান্ত পর্যায় হল লম্ফঝম্ফ নাচ যেখানে গাম্ভীর্যের বাঁধান শক্তি দিয়ে ভাঙ্গা হয়। ইউরোপে এই নাচ খুব বিরল । শুধমাত্র পাহাড়ী অঞ্চলে পশু-পালক জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনও কিছু বিদ্যমান যথাঃ বাস্কুইস, এরাঙ্কু, ব্রেভারিয়ান, সুফ্লাটার, মোরল্যাস্কস কোলা, স্কটস, ফ্লিংগ এবং নরওয়েজীয়ানগণ ।

প্রাচীন গ্রীক গণ নিপূণ লম্ফঝম্ফ নাচুয়ে। ক্রমসম্প্রসারণশীল উঁচু লম্ফঝম্ফ বিরল সৌন্দর্যময়, রুক্ষহীন এবং পিছুটানহীন গ্রীক কালো আকৃতির বৈশিষ্ট্যময় পাত্রে অঙ্কিত যেটা বার্লিনের প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘরে রক্ষিত আছে (প্লেট-১২)। দুই নাচুয়ের লম্ফঝম্ফের যে খেলাটা চিত্রিত সেটা এখনও পূর্ব আফ্রিকার টানগা উপকূলে দেখা যায়।

জর্জিয়ানদের একটা নাচ এ ব্যাপারে উল্লেখ করা যায়। ক্যাচিয়ার একক নাচে একজন আস্তে আস্তে হেঁটে যায় একহাত বুকে অন্য হাত পাশে সোজা থাকে। ঢোল যতই দ্রুত বাজে সে পিছনে হেলে উপরে পা দুটা ক্রস করে লম্ফঝম্ফ দিতে দিতে সবদিকে শরীর ঘুরায়, উৎফুল্লত এই নাচের মর্মমূলে আবদ্ধ, ক্রমাগত গতিবেগ বৃদ্ধি এক উত্তেজনাকারী স্ট্রীটা হিন্দুস্তানে বাঙ্গালীরা লক্ষরক্ষ নাচ করে; ইন্দোচীনে নাগাগণ এবং নাগাদের অন্য বৈচিত্রতা আছে এই রকম যে, তারা মাটি স্পর্শ করবার পূর্বে তাদের পা দুটা শূন্যে তিন বার ক্রস করে।

এইরূপ আমাদের সতের শতকের এন্ট্রিচ্যাটের নাচ দূর- প্রাচ্যেও দেখা যায়। কিন্তু আফ্রিকা লক্ষক্ষ নাচের মহাদেশ। ওয়নয়ামওইজ এবং পূর্বদিকে ওশীবা “প্রচন্ড উর্ধমুখি লম্ফঝম্ফ” প্রদান করে, পশ্চিমের ইউরুবাগণের যে “শরীরে হাড় আছে” এটা কেউ বিশ্বাস করতে চাবে না। মধ্য-আফ্রিকার শত শত এঙ্গোনীগণ যুদ্ধ-নাচে সমবেতভাবে একই সময়ে লক্ষঝম্ফ করে।

দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকায় হিরেরোগণ গোল চক্র করে এক সঙ্গে হেঁটে আসে। “দুইজন নাচুয়ে ও একজন গায়ক মধ্যখানে অবস্থান নেয়। পরে পুরান দলনেতার প্রশংসার গান গায় সম্ভবতঃ তাদের প্রিয় ষড়গুলির জন্য এবং হাতদিয়ে তাল রক্ষা করে ও দুইজন নাচুয়ে লম্ফঝম্ফ করে। গোলচক্রের লোকেরা এত জোরে পা দিয়ে আঘাত করতে থাকে যে মাটি কাঁপতে থাকে”।

আমরা ম্যাগ্লবৌ জনগোষ্ঠী এবং রাজপ্রতিনিধি শাসিত উগান্ডার নীলোটিক সার্কদের মধ্যে বিশেষ ধরনের যথার্থ নাচের বর্ণনা পাই লক্ষক্ষই প্রধান দেহ ভঙ্গি। উত্তেজিত শরীরের বাহুদ্বয় আড়াআড়ি কিন্তু হাত শরীরের উপর শক্ত করে আবদ্ধাবস্থায় মাজাতে স্থাপিত। উপসংহার খুব পরিস্কার যে, এই একই রকম লম্ফঝম্ফ নাচ প্রাচীন মিশরীয় নীল অববাহিকার খোদাই মূর্তির মত। এই সকল উদাহরণ প্রধানতঃ নেওয়া হয়েছে আফ্রিকা, সাদৃশ্যপূর্ণ ইউরোপ ও প্রধান বিভাগগুলি থেকে যেখানে প্রধান জীবিকা পশু-পালন। এটা একই রকম সত্য এশিয়ার লম্ফঝম্ফ নাচে।

লক্ষরক্ষ নাচ আবার প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ পুঞ্জে ও আমেরিকার লোকজনের নিকট ব্যতিক্রমধর্মী তবে তারা পশু-পালক না। নিউ গায়ানার কাছে টামেলো দ্বীপে একজন “তার পা দুটা পাশে এত ছাড়য় এবং সামনে হাঁটু সামান্য নিচু করে উপরে নিচে লাফাতে লাফাতে পাশে যেতে থাকে সেটা একটা গোলক তৈরী করে”। লুপ্ত তাসমানিয়ান ও নিউজিল্যান্ডের মাউরীদের যুদ্ধ-নাচ এত উঁচু লাফের যে এই রকম বর্ণনা পাওয়া যায়।

আমেরিকানদের মধ্যে ক্যালিফোর্ণিয়ার ইউরোকাদেরকে লক্ষঋক্ষ নাচের উদাহরণ আমাদের উল্লেখ করতে হবে। নাচের ঝুড়ি নিয়ে হাত উপরে তুলে, হাঁটু বেড করে মাটিতে দোলাতে থাকা অবস্থায় নাচুয়ে অর্ধ-ফুট উপরে লাফ দেয়। এই লোকেরা পশু-পালক না। কিন্তু টামেলো অধিবাসীগণ টোটেম বিশ্বাসী এবং তাসমানিয়ানগণকে তাদের পুরোভাগে বিবেচনা করা হয়। আফ্রিকার পশু-পালক ও নিউজিল্যান্ডের মউরীগণ একসঙ্গে অগ্রবর্তী পুরুষ প্রধান কৃষ্টির গ্রুপে অবস্থিত, যে বিষয়ে আমরা পরে আরো আলোকপাত করব।

উত্তেলিত নাচের বাধাহীন দেহ ভঙ্গিমা লক্ষঋক্ষ নাচের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। শিশুদের দেহ পুষ্টি সাধনের জন্য তাদের নাচের মত উর্ধমুখি উত্তোলনের প্রসঙ্গ আমরা পরে বলব। পূর্ব আফ্রিকার নিয়োগণ ও আল্পাইনদের কোন কোন অংশে কুমারী উত্তোলন এই উচ্চাঙ্গের প্রথায় পৌঁছেছে।

প্রত্যেক জার্মান জানে স্কুপ্লাটার শেষ দৃশ্যে উত্তোলন নাচ কি প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে এবং ফ্রাংকদের মেইন উপত্যকার মে-নাচে, এই রকম চর্চা আরো দেখা যায় এরাগনদের জোটা এল এয়ারে এবং ক্যাটালোনিয়ার করেস্তা আলটা ও সারজানাতে। এটা সেই রকম আওফারফেন ‘উপরে উড়াযেটার জন্য জার্মান পৌরসভা আইন সতের শতাব্দী পর্যন্ত কঠিন শাস্তি দিয়েছে।

এই রকম নাচের একটা বিভাগকে (সশব্দে বা সজোরে রাখা) চপেটাঘাত নাচ বলে ডাকা যেতে পারে। শরীরের অদম্য প্রাণময়তা এবং উচ্ছাস শক্তির বহিপ্রকাশের তীব্র স্পৃহা শুধুমাত্র নির্ধারিত দেহ ভঙ্গিমার মধ্যে সন্তুষ্ট থাকতে পারে না। হাত ও পায়ের ভঙ্গিমা প্রচন্ড উত্তেজনায় পরিবর্তিত হয় সবেগে ঘুরান এবং লাখিমারা প্রবল সোরগোলের সৃষ্টি করে।

সোয়েরিয়ার সাইডারসটার নিউজিল্যান্ড ও ক্যারোলিন দ্বীপ পুঞ্জের উরু চাপরান নাচ এই ধরনের নাচের অন্তর্গত। ব্রাডারিয়ান স্কুপ্লাটার আরো বন্য এবং ইউক্রেনের প্রিসঙ্গাডকা গোড়ালী দিয়ে আঘাত করে এবং পুরান গ্রীক নাচে পাছা থাপরায়। সবচেয়ে পরিত্যক্ত পিছনে লাখিমারা যেটা ছোট আন্দামানের নারীগণ খুব উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে করে এবং যেটা রথপাইজিয়েন নামে হেলনীক মাচুয়ের piece de resistance তে ছিল।

(প্রাচীন লেখকগণ একজন স্পার্টান-কুমারীর প্রশংসায় গান যে, ঐ মায়ে তার পা বিরামহীন ভাবে পিছনের দিকে হাজার বার দুলাতে পারে)। এই মার্চ মৌলিকভাবে জীব-জন্তুদের থেকে আসতে পারে এইজন্যে যে, চেকগণ এই দেহ ভঙ্গিমা করে যার নাম তথা ” (বালকটি ভেড়া চাপড়ায়)।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

যদিও লঞ্চার নাচের বাহ্যিক রূপ উর্ধমুখি প্রচণ্ড বেগে উঠা পড়া কিন্তু স্ট্রাইড নাচে প্রচন্ডবেগে দেহ সম্মুখ ভাগে তরঙ্গায়িত করা। ইস্কানদের সঙ্গে মিশরীগণ আবার প্রাচীনকালের সবিশেষ উদাহরণ রেখেছে : গাজায় প্রাপ্ত ৫ম রাজবংশের (২৭০০ খৃঃ পূঃ) ১৫নং সমাধিক্ষেত্রে সাজে ফসল কাটার নাচে এবং রাজার দৌড় নাচে।

আধুনিকদের মধ্যে স্ট্রাইড মায়ে ক্যালিফোর্নিয়ার বিশেষভাবে নির্দিষ্ট ট্রাইব বা জনগোষ্ঠী ডিজিওনো, পুজিনো, মজে, উত্তর-পশ্চিম ব্রাজিলের জনগোষ্ঠী এবং বুবী, আফ্রিকার ফার্নানডোন পো ।যখন ক্যালিফোর্ণিয়ার লুজিনোগণ জোড় পায়ে লাকদের এবং পরে দীর্ঘ পদক্ষেপে চলে তখন তারা ছড়ান নাচের মডেল বা নমুনাই দৃশ্যমান করে ।

দীর্ঘ পদক্ষেপে উর্ধমুখি নির্দেশ করান যায়। এটা তখন পা ঝাড়া হয়ে পরে এবং এ্যাক্রোব্যাটিক শক্তি এবং নিপুণ নাচের কাছাকাছি পর্যায়ে এসে দাঁড়ায়। তৃতীয় সহস্রবর্ষের মাঝামাঝি মিশরীয় ষষ্ঠ রাজবংশের খোদাই ফলকে পূর্ব নাচের সারিতে মাহিলা নাচুয়ে আঁকা আছে, সম্পূর্ণ শরীর পিছনে হেলান তাদের ডান পা ১৩৫ ডিগ্রী কোণে প্লেট-৯) সামনের সারির নাচুয়েদের মাথার উপরে রাখা।

আধুনিক ইউরোপের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ দেহ ভঙ্গিমা লক্ষ্য করা যায়। বৃটেনের কৃষাণী বিপরী নাচে পা সিলিং পর্যন্ত নিক্ষেপ করে, বাস্কুইস এউরেসকোতে এবং ক্যাটালোনিয়ানগণ সারডানায় একে অন্যের মাথার হ্যাট লাথি মেরে ফেলে দেয়, একজন পারস্যের ক্যান ক্যান পরিহিত মহিলা দর্শকদের মধ্যে এক ভদ্রলোকের মাথার হ্যাটে লাথি

মারে (প্লেট-৩১)। জুয়াট ফ্লাইং নাচ একটি বিচিত্র উদাহরণের লাথি ছুড়া নাচ হিসাবে আমরা আখ্যায়িত করতে পারি। শরীর উরু করে পা একবার সামনে পিছনে ছুড়তে থাকে। একজন পর্যবেক্ষক লক্ষ্য করেন যে, উত্তর আফ্রিকার ম্যাগ্লবেট্রুদের নাচুয়ে রাজা তার পা দুটা কসাক নাচের মত মাটির সমান্তরালভাবে সামনে পিছনে ছড়াতে পারে।

পারস্যবাসীদের কাছ থেকে গ্রীক গণ এই নাচ গ্রহণ করে যার নাম ওক্লাসমা, এই বাঁকান বৈশিষ্ট্য ইস্কানদের ছিল এবং স্ট্রাবো এটার বর্ণনা দেন প্রাচীন ইব্রিয়ানদের কাছে। স্পেনীয়ার্ড ক্যারো (১৬২৬) ইব্রিয়ান নাচে একগুয়েমীর আবশ্যকতা সঠিক বলেছেন।

স্ট্রাবো তাঁর সময়ের নাচ সম্বন্ধে যা বলেন ইব্রিয়ানদের নাচ একই রকম ঃ এই সবগুলির মধ্যে নাচুয়ে দক্ষতার সঙ্গে উবু হয়ে বসে ক্রস (আড়াআড়ি) করে পা দুটা ছড়ায় রাখে। ইউরোপের অনেক জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই উবু হয়ে পা নিক্ষেপ করা নাচের রীতি এখনও প্রচলিত।

স্পেনে ক্যারাডা নামে সংরক্ষিত ইউক্রেনে প্রিসজাডকা নামে পরিচিত হোপাকের অংশ বিশেষ রূপে এবং মধ্য ও পশ্চিম ইউরোপের হাঙ্গেরীতে এর উদাহরণ আছে যেমন ফ্রান্সে রিগুউডন ইংল্যান্ডে হর্নপাইপ এবং আয়ারল্যান্ডে জিগ। ষোলশতাব্দীতে গ্রুনাচ মৃদু দরবারী আভিজাত্যের ফরমে ছিল।

স্কীপ নাচের দেহ ভঙ্গিমায় দুই পা ব্যবহৃত হয় যার জাম্প-নাচের সঙ্গে পার্থক্য আছে, প্রকৃত জাম্প নাচে নাচুয়ে মাটি থেকে দুই পা একই সঙ্গে তুলে। এটা আমার কাছে প্রতিয়মান হয় যে, শুধু হিব্রু ভাষায় এই দুই ধরনের মধ্যে পার্থক্যের কথা পৃথক পরিভাষায় আছে।

* (অক্ষর-১) রাকাড ক্রিয়াটি ব্যবহৃত হয় মেষশাবক এবং হৈহুল্লোররত শিশুদের, চালুনির মধ্যে শস্য ঢালা এবং একটি অমসৃন পথে শস্যবাহী গাড়ী কঠ কঠ করে যাচ্ছে তার বর্ণনায় ব্যবহৃত হয়। তালমাডে এটার অর্থ একপায়ে দড়ি লাফান যেখানে * (অক্ষর-২) (kafas) কাফাস অর্থ দুই পায়ে লাফ I Chr. ১৫:২৯ * (অক্ষর-৩) Ark of the Covenant এর সামনে রাজা ডেভিডের নাচের বর্ণনা দেয়া আছে সুতরাং স্বীপ-নাচ ছিল।

এই দুই চিন্তাধারা মধ্যে ভ্রমণ-তথ্য এবং ঐতিহাসিক জরীপ খুব কমই পরিস্কার বিভক্তির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে।

Hiipfen এবং Springen জার্মান লেখকগণ পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করেন যেমন ইংরাজীতে skipping. jumping. বা leaping দ্বীধাহীন ভাবে ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা নিশ্চিতকরা সম্ভব যে, লেখক কি বোঝাতে চান সেটার উপর, যেমন নাচকে বর্ণনা কর হয় হালকা এবং আনন্দঘন ব্যাপারে অথবা শুধুমাত্র মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে অতিক্রম করার শক্তিশালী প্রচষ্টার জন্য ।

পরিস্কার পার্থক্যের অভাবে দুই ধরনের নাচের প্রচার বিঘ্নিত হচ্ছে। যদিও এটা নিশ্চিত যে, স্কীপ-নাচ খুববেশী প্রচলিত ও পুরান। এমনকি এটা বাস্তব; আন্দামানী পিগমিগণ এটার সঙ্গে পরিচিত।

হাঁটু তোলা নাচ উর্ধমুখি নাচের একটা সংযত রূপ। দ্রুত বদল করে পায়ের উপরের অংশ উঠান নাচ যা ইন্ডিয়ানদের বিশেষ বর্ণনায় এবং প্রায় প্রাচীন মিশরীয়দের মধ্যেও বিদ্যমান ছিল।

লাঞ্জ-নাচ সম্পর্কে খুব সতর্কতার সঙ্গে বলা যায়, লম্বা পদক্ষেপের সঙ্গে নাচের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। এটা খুব সত্য যে, সেটা মালয় দ্বীপ পুঞ্জের কৃষ্টিতে উন্নতির চরম স্তরে পৌছেছে। সংযত দেহ ভঙ্গির মধ্যে বৈশিষ্ট্য কেন্দ্রীক আকস্মিক ধারণাযুক্ত গতিশক্তিহীন লম্বা পদক্ষেপ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মূলবিন্দু ধারণপূর্বক ঘনঘন পরিবর্তনশীল, উত্তেজক ও মুক্ত। ছোট্ট কথায় অসংযত দেহ ভঙ্গিকে সংযত দেহ ভঙ্গির নিয়ন্ত্রণাধীন করা।

টো-নাচ শরীরকে উর্ধমুখি করে কিন্তু মাটি স্পর্শের বাইরে না এই বৈশিষ্ট্যের। এটা খুব বেশী প্রচলিত না। এক পায়ের নাচ একই ইচ্ছার বহিপ্রকাশ। এক পায়ের নাচে কম স্থান লাগে এবং ভূমির সঙ্গে যোগাযোগ কমায়ে দেয়। এটা খুব কমই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। জাপানীদের এক পায়ের নাচ পরে মটিভ অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে, যা রণ- পায়ের সঙ্গে উদ্ভিদের বর্ধন প্রক্রিয়া আকৃষ্ট করার জন্য মাঠ উৎসবে নাচা হতো ।

শেষোক্ত নাচের অদ্ভুত দ্বৈত বৈশিষ্ট্য এবং লক্ষণীয় পার্থক্যপূর্ণ ঘনিষ্ঠ নাচ এবং ছড়ান-নাচের মূল কারণ শরীরবৃত্তিক ব্যাপার। একটা মৌলিক সত্য জিমন্যাস্ট ও এথলেটসদের জানা আছে। নারীদের চেয়ে পুরুষগণ মুক্ত, গতিময়, অগ্রগামী ও উচ্চ ভাবাপন্ন অবস্থায় ভালভাবে খাপ খাওয়াতে পারে। তার অঙ্গভঙ্গি দেহসংযুক্ত হতে চায় উর্ধমুখি বা বহির্মুখীর চেয়ে সাধারণতঃ ভুমির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে চায়।

তবে এটা ভাগ করা যাবে না যে, ঘনিষ্ঠ-নাচ নারীদের আর ছড়ান-নাচ পুরুষদের। পুরুষগণ ঘনিষ্ঠ-নাচ অনেক সাংস্কৃতিক দলে নাচতে পারে এবং তা খুব ভালভাবে পারে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ছাড়ান-নাচ পুরুষদের জন্যই রাখা। নারীদের স্বভাবসিদ্ধতা বিবেচনা করে নারীগণ অংশ নেয়, তাতে পুরুষগণ অনুমতি দিবে কি দিবে না সেটা বিচার্য হয় না।

পশ্চিম সাইবেরিয়ার অষ্টাকদের নাচ এত বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, (পীপ) লাফান ইল্যাসটিক হাঁটুর মত ছড়ান। নারীগণ লাফান নাচ করে না। তারা হাঁটু নরম করে বেন্ড করে, নাচের সময় পা কখনও মাটির স্পর্শ ছাড়ে না। ক্যালিফোর্নিয়ার হুপাদের সম্বন্ধে হুবহু একই কথা খাটে। নাচুয়েগণ উভয় পা তুলে নাচে যখন কুমারীগণ পায়ের (টো) অগ্রভাগ পর্যন্ত উঠায় কিন্তু মাটির স্পর্শ ছাড়ে না।

এপিনেজদের মধ্যে নারীগণ শুধু হালকা হাঁটু বেন্ড করে, অল্প গতিতে নাচে কিন্তু পুরুষগণ লাফ দিয়ে নাচে। ক্যালিফোর্ণিয়ার মাইডু পুরুষগণ কষ্টসাধ্য কঠিন লাফ দেয় কিন্তু নারীগণ শান্তভাবে শরীর আলতো করে ঘুরায় মাত্র। উত্তর-পশ্চিম ব্রাজিলের হুহুতানিদের মধ্যে চিত্রিত মুখমন্ডলের সুন্দরীগণ বিরাট আকৃতির পুরুষ নাচুয়ের লম্বা লাফের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে অতিব আগ্রহী।

লয়েলটি দ্বীপ পুঞ্জের পুরুষগণ নাচে দ্রুত ও আক্রমণাত্মক ভাবে কিন্তু নারীগণ একইস্থানে সোজা হয়ে দাঁড়ায়ে তাদের বাহুদ্বয়, কোমর নাড়ায়। নিকোবারদের মধ্যে পুরুষ বসে, উঠে, বেন্ড ও লাফ দেয় নারীগণ স্বভাবিক পদক্ষেপে তা অনুসরণ করে।

হিরেরোদের মধ্যে পুরুষগণ লক্ষঝম্প করে নারীগণ বাউ করে এবং হাত দিয়ে মাটি স্পর্শ করে। রওম সিয়েরা লিওয়নের পুরুষগণ সবচেয়ে পরিশ্রমী, উদ্যোগী, নারীগণ ধীর। ইউক্রেনের হোপাকদের মধ্যে এবং অন্য স্লাভিক নাচে পুরুষগণ লাফ দেয় নারীগণ দোলে বা হালকাভাবে ঘুরে।

পুরুষালী দেহ ভঙ্গির তুলনায় মেয়েলীভঙ্গির ব্যাপ্তি কম হয়। দৃঢ় লাফ ভূমির উপর পায়ের অগ্রভাগ কম প্রসারিত করে এবং দীর্ঘপদক্ষেপ গতিশীল পদচালনায় ব্যাত্যয় ঘটায়। মেয়েদের নাচ সব সময় প্রায় সব দেশে সব স্থানে অবরূদ্ধ ও কম ব্যাপ্ত রূপে দৃশ্যমান হয় এমনকি মূলভাব এবং পার্বণের সত্যিকার ব্যাপার থেকেও সরে গিয়ে অবশ্যম্ভাবী রূপে সীমিত আকারে সীমাবদ্ধ হয়। যেমন ক্যারোলিন দ্বীপ পুঞ্জের প্লাউদের মধ্যেঃ

“একদিক থেকে একদল মহিলা সমস্ত গায়ে লাল রং লাগায়ে হাতে লেস লাগান অবস্থায় তারা ছোট দলে ক্ষিপ্ত ভঙ্গিমায় অগ্রসর হয় ঠিক এমনি ধরনের অন্যদল বিপরীত দিক থেকে পৌঁছে। তারা তিন/চার ধাপ দূরে অবস্থান নেয় যেন তারা যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে ।

কিন্তু তারা থেমে যায় এবং অনেক সারিতে সারিদ্ধ হয়ে একঘেয়ে সমবেত গান শুরু করে যদিও সেটা শ্রুতিমধুর না । অনেক বছেরের মধ্যে একবার আমি প্রথম তাদের বুকের মধ্যে থেকে একটা শব্দ শুনতে পেলাম। ততক্ষণে তারা স্থান বদল করে নাই কিন্তু তাদের কোমর বিচিত্রভাবে, সাবলীল ভঙ্গিতে অথচ সাবধানে পরিমিত ছন্দে সাজান।

তাদের গান পাতার স্কার্টের উচ্চ শব্দে আরো তালে, সুরে প্রতিধ্বনিত ছিল। পরে জানলাম গত যুদ্ধের একটা দৃশ্যের পুনঃ অবতারণা করা হয়েছিল যা হঠৎ একটা বিকট হৈচৈ এর মধ্যে শেষ হয়” ।ঘনিষ্ঠ-নাচে সব ব্যতিক্রম অভিপ্রায়ের উপর নির্ভর করে। ইউরোপীয়ান মহিলা লাফদেয় যখন সে বীজ বপনের ইচ্ছা পোষণ করে।

মিশরীয় মহিলা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দীর্ঘপদক্ষেপ দেয় এই জন্য যে, তাকে নাচের মাধ্যমে অবশ্যই মৃতাত্মার ইহজাগতিক জীবন জয় করতে হবে এমনকি অভিপ্রায়ের উপর নির্ভরশীল ক্যারলিন দ্বীপ পুঞ্জের প্লাউ জনগোষ্ঠীর মহিলাগণ অদম্য যৌন স্পৃহার “ফ্রি ভোলাস” লাফ দেয় এক নারীসুলভ দৈবশক্তির সম্মানে এবং মাসাই এর তরুনী নাচে ছোট লাফ দেয় অপর প্রেমিকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য যদি একইভাবে অন্য প্রেমিক তার লাফের জবাব দেয় তবে সেটা তাদের সন্ধ্যা মিলনের সম্মতি সূচক।

তবে ব্যতিক্রম দেখা যায় মোলুক্যান দ্বীপের টিডোর জনগোষ্ঠীর ছোট মেয়েদের মধ্যে ডিজিন ভোজ উৎসবে, যাতে প্রথমেই সংজ্ঞাহীন হতে হয়, পরে তাদের স্বভাবজাত লাফ-নাচ করতে হয়।

সম্প্রসারণশীল ও ঘনিষ্ঠ বা কেন্দ্রীভূত নাচের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের বৈপরীত্যের চেয়েও অধিক বৈপরীত্য জনগণের। আমরা লক্ষ্য করি যে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় লম্ফঝম্ফ নাচ কম। অথবা আরো আশাব্যঞ্জক বর্ণনা করা যায় যে, যে সব জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি উৎকৃষ্ট বলে চিহ্নিত তাদের নাচ তত বেশী কেন্দ্ৰীভূত। যত বেশী টোটেম বিশ্বাসী এবং পিতৃতান্ত্রিক তাদের নাচে ততবেশী লম্ফঝম্ফ ব্যবহার হয়।

এইভাবে প্রধান লম্ফঝম্ফকরীগণ হল, মৌলিক কৃষ্টির মধ্যে তাসমানিয়ানগণ, প্রাথমিক উপ-জাতীয় কৃষ্টির মধ্যে টোটেম বিশ্বাসী টরেস প্রণালীর বাসিন্দা ও টুমেলো এবং মধ্য উপ-জাতীয় কৃষ্টির মধ্যে যাজকীয় স্থাক, হিরেরো, কাচিয়ান, আবচেস, অস্টাক ও নাগা । এইসব জনগোষ্ঠী লক্ষৰ নাচ ব্যবহার করে অন্য কথায় এদের অর্থনৈতক ও সামাজিক অবস্থান উত্তরাধিকার সূত্রে পৌরুষদৃপ্ত।

সমকালীন হারবার্ট বলডাসের উত্তর-পূর্ব চ্যাকো উপ-জাতির নাচের বর্ণনা এই সকল সম্পর্কের আরো প্রমাণ, যা আমাদের জন্য খুবই মূল্যবান কেননা তদন্তকারী নাচ ও অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পর্কে কিছুই জানেন না। ” লক্ষক্ষ বন্য নাচে, প্রচন্ড ঘটঘট শব্দে এবং উচ্চ কোলাহলপূর্ণ গানে চ্যামাকোকোগণ তাদের প্রকৃতিগত টেম্পো প্রকাশ করে। অন্যদিকে কাশকিহাদের নাচে জড়তা আছে ও সামনে পিছনে খুব কমই হাঁটতে হয়। “এইদুই উপ-জাতি পাশাপাশি বসবাস করলেও তাদের নাচের বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়ভাবে বিপরীতমুখী।

 

সম্প্রসারণশীল নাচ

 

অর্থনৈতিক বৈপরীত্য তেমন গুরুত্বপূর্ণ না। লক্ষরক্ষকারী চ্যামাকাকোগণ শিকারী; জড়তাপূর্ণ নির্জীব কাশকিহাগণ কৃষিজীবি এটার ভুল বুঝাবুঝি হওয়া উচিত না। অর্থনৈতিক কাঠামো নাচের ধরন নির্ধারণ করে না। “কাশকিহাগণ ধীর কিন্তু খুব বুঝদার, খুব সচেতন, শান্ত, সম্ভবত চিন্তাশীল, আকার ইঙ্গিত করণে সংশ্লিষ্ট না।

“এই সব কারণে তারা ঘনিষ্ঠ ভাবে নাচে এবং এজন্যই তারা কৃষিজীবি। এখানে আমাদের প্রশ্ন এসে যায় যে, যান্ত্রিক চরিত্র ও কৃষ্টির উৎকর্ষতার সম্পর্ক কি হতে পারে উত্তরে বলতে হয় নৃতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর যথাযথ উত্তর হওয়া উচিত।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment