সংঘবন্ধ নাচ

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – সংঘবন্ধ নাচ।যা “সারা বিশ্ব জুড়ে নাচ” খন্ডের অন্তর্ভুক্ত।

সংঘবন্ধ নাচ

 

সংঘবন্ধ নাচ

এটা সম্ভবতঃ সঠিক হবে যদি আমরা সর্বপ্রথম সংঘবদ্ধ ঘের-নাচগুলিকে সাধারণভাবে কোন রকম শিথিল শ্রেণী বিন্যাসে উপস্থাপন করি এই জন্যে যে, নাচের প্রাণবন্ত বিষয়-বস্তু শক্ত ফাঁদে জড়ায়ে নিঃশেষ হয়ে না পরে। তথাপি যতদুর সম্ভব পরিচ্ছন্ন চিত্রমালা যথাযথ শ্রেণীবদ্ধভাবে বিন্যাস করা উচিত যাতে ইতিহাস নির্মাণে সঠিক পদক্ষেপ আগায়ে যেতে পারে।

সবচেয়ে চিহ্নিত পার্থক্য সাধারণ ও জটিল ঘের-নাচের গঠনশৈলীতে বা ফরমে বিদ্যমান। সাধারণ ঘের-নাচে নাচুয়ে তার নিজস্ব অবস্থানে (নাচের অনুষ্ঠানের জায়গায় নাচে এবং জটিল ঘের-নাচের নাচুয়ে তার অবস্থান সাময়িকভাবে বা স্থায়ীভাবে পরিবর্তন করে।

যদিও নাচুয়েগণ গোল হয়ে, সোজা লাইনে, চার আকৃতিতে অথবা কুন্ডলী আকারে চলে তারা সারিবদ্ধভাবে এবং নাচের সর্দারের নেতৃত্বে থাকে যেমন ভেড়া তার বয়জেষ্ঠ্য ভেড়া (প্রজোননক্ষম পুরুষ ভেড়া) দ্বারা পরিচালিত হয়। ক্রসিং করতে, শিকল তৈরীতে, সেতু, খিলান অথবা তারা গঠনে অন্যকথায় তারা অবশ্যই স্বাধীন ভাবে কাজ করে; তারা স্থান পরিবর্তন করে।

সুতরাং আমাদের উচিত হবে দুই অর্থবোধক পদবী “জটিল” অথবা “কোরাল আকৃতির”র পরিবর্তে এই ফরম বা গঠনশৈলীর নাম “স্থান পরিবর্তনশীল সংঘবদ্ধ নাচ” নামে অভিহিত করা । আমরা অঙ্গভঙ্গির বর্ধিষ্ণু সষমার সঙ্গে এই বিরাট দলগুলির মধ্যে থেকে সম্পূর্ণ ক্রমবৃদ্ধিময় ফরম বা গঠনশৈলীর পার্থক্যকরতে পারি  গোল থেকে চক্রকুন্ডলী, সর্পিল লাইন থেকে আঁকা বাঁকা, দ্বৈত চক্র থেকে চেন লাইন বা শিকলের মতলাইন।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

দ্বৈত চক্রের মধ্যে ফরম বা গঠনশৈলীর সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় ক্রমবৃদ্ধির স্তরের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তৃতীয় ধরন বা স্তর এই সকল ব্যাপারকে স্বাধীন করে দিয়েছে : দ্বৈত চক্রে বিপরীতমুখী অঙ্গভঙ্গি এবং মুখোমুখ ভাবে করে।

কিন্তু বর্তমানের জন্য আমরা এই ধরনের শ্রেণীবিন্যাস পর্যবেক্ষণ করা থেকে বিরত থাকি। আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে কেন না ইউরোপের বাইরে অধিকাংশ নাচই এবং পাশ্চাত্য কৃষ্টির অধিকাংশ চমকপ্রদ নাচই বিশেষ করে ফরম বা গঠনশৈলীর দিক থেকে খুবই অল্প বর্ণিত হয়েছে।

এই আলোচনা প্রধানতঃ নাচুয়েদের হাতে হাত ধরে একত্রে মিলনে, বাহুবন্ধনে অথবা অন্য কিছুতে তাদের পরস্পরের মধ্যে কমবেশী কতটুকু গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান সেই সম্পর্কযুক্ত। কৃষ্টির সর্ব নিম্নস্তরে নাচুয়ের মধ্যে একে অপরকে ধরে নাচার প্রচলন খুবই স্বল্প, প্রত্যেক নাচুয়ে নিজে নিজে নাচে অপরকে স্পর্শ করে না, তার নাচের গতি বা অঙ্গভঙ্গির গতিপথেও কাউকে লক্ষ্য করে না।

এই স্তর উচ্চতর কৃষ্টির কাল পর্যন্তও বিস্তৃত। তারা সকলে নিজেদের গরজে নাচে কাউকে স্পর্শ পর্যন্ত করে না এতে এই কথাটাই সঠিক ভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয় যে, নাচ সামাজিক কর্মকান্ডের ব্যাপার, যেমন কলম্বিয়ার ক্যাজাবাদের নাচ, ইন্দোচীনের মধ্যে খাসীগণ, টগোর ডলেদের নাচ বলা যায়।

এ, এল, কোয়েবার উল্লেখ করেছেন যে, ক্যালিফোর্নিয়ার সাস্টাগণ নাচের মধ্যে ঘটনাক্রমে কেউ কাউকে স্পর্শ করে থাকতে পারে কিন্তু তাদের মধ্যে সত্যিকার অর্থে সম্প্রদায়গত কোন নাচ নাই। কোন বিশেষ প্রয়োজনে যখন তারা নাচে তা একজনের জন্য অথবা কোন একটি মাত্র দল থাকে।

তারা লড়াইয়ের প্রস্তুতির জন্য নাচে, মেয়েদের বয়ঃসন্ধিক্ষণে কোন জটিলতাকে সহায়তা দেবার জন্য, ফকিরান্তি ওস্তাদি আয়ত্তের জন্য, রোগ নিরাময়ের জন্য এই সব কিছু। সাস্টাদের মধ্যে প্রকৃত পক্ষে বিজয় অথবা মাথামুড়া নাচের কোন কৃতিত্ব নাই, উত্তর-পশ্চিম আমেরিকার বৈশিষ্ট্যই এই সকল নাচের শূন্যতা ।

 

সংঘবন্ধ নাচ

 

(কৃষ্টি) উচ্চতর স্তরের মধ্যে সংঘবদ্ধ নাচুয়েগণ প্রায় সর্বক্ষণই একে অপরকে স্পর্শ করে থাকে যা তাদের চলার পথে একই চলন ও অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করে। যোগাযোগ যতই ঘনিষ্ঠ সংঘবদ্ধ সামাজিক বৈশিষ্ট্য ততই সুদৃঢ় হয়। তারা হাত ধরে, তারা তাদের সহযাত্রীর কাঁধে অথবা কোমড়ে হাত রাখে, অথবা বাহুদ্বয় শৃঙ্খলিত করে; চীনাদের আগে হাইনানের “লী”গণ পোলিশ ক্রাকোউয়াকদের মত এমনকি তাদের বামবাহু ডানদিকের লোককে ডানবাহু বামদিকের লোকের বুকের উপর দিয়ে প্রসারিত করে: নিউগিনি, গ্রীস এবং রোমাগনার শিশুগণ একে অপরের কান ধরে থাকে ।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment