আজকের আলোচনার বিষয়ঃ উনিশটি তালের তৎকার

উনিশটি তালের তৎকার
তাল হলো ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে বা নৃত্যে একটি ছন্দের নিয়ামক এবং ছন্দের অংশাদির আপেক্ষিক লঘুত্ব বা গুরুত্বের নির্ধারক।
তাল হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট সময়কে নির্দিষ্ট ক্ষুদ্রভাগে ছন্দবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে তাল যন্ত্রে বাদনের মধ্য দিয়ে তার পুনরাবৃত্তি ঘটানো। প্রকৃতিতে আমরা যা কিছু অবলোকন করি তার সবকিছুই ছন্দবদ্ধ ভাবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘটে চলেছে অর্থাৎ সবই তালবদ্ধ।

তালের নির্দিষ্ট মাত্রা সমষ্টিকে কতকগুলি ছোট বা বড়, সমান বা অসমান বিভাগ এ বিভক্ত করা হয়। এই বিভাগ দুই বা ততোধিক মাত্রার হতে পারে।
যে সব তালের পদবিভাগ গুলি সমান মাত্রার দ্বারা গঠিত,তাকে সমপদী তাল বলে। যেমন: দাদরা তালটি ০৬ মাত্রা দ্বারা গঠিত,এর পদবিভাগটি হচ্ছে– ধা ধি না । না তি না।। আর্থাৎ তিন তিন করে সামান মাত্রা নিয়ে এর পদবিভাজন করা হয়েছে কাহারবা,ত্রিতাল,চৌতাল,খেমটা, একতাল, তাল খামস, ইত্যাদিও সমপদী তাল। যে সব তালের পদবিভাগ গুলি অসমান সেই সব তালকে বিসমপদী তাল বলা হয়। যেমন তেওড়া , ঝাপতাল, দোবাহার, রূপক তাল ইত্যদিও বিসমপদী তাল।

নৃত্যের সময় পদাঘাতের দ্বারা যে বোল ( তাথেই তৎ থেই ইত্যাদি ) বা ধন প্রকাশ করা হয়, তাকে বলে ‘তৎকার’ বা ‘তথকার’।
তবলা-বাদকেরা যেমন কায়দা’ বাজান, কথক নৃত্যশিল্পীরা তেমনি তৎকারের বোলকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নানা ছন্দ, তাল ও লয়ে রচনা করে দেখান।
পণ্ডিতদের মতে তৎকার বস্তুটি খুব প্রাচীন । অনুমান করা হয়, সাতশ’ বছরেরও বেশি এর বয়েস।

সাধারণ ভাবে তৎকারের চারটি ভাগ স্বীকার করা হয়। কিন্তু শাল্ব মতে এর ভাগ দেখা যায় পাঁচটি—নাত্যাঙ্গী, তালাঙ্গী, কবিতাঙ্গী, সঙ্গীতাঙ্গী ও মিশ্রাঙ্গী বোল বা তোড়া কথক নাতো সংগীতাঙ্গী বোল প্রায়ই প্রযুক্ত হয় না। ভরতনাট্যমেই এটি প্রযোজ্য ।
নিম্নে প্রদত্ত কয়েকটি প্রকার ছাড়া উক্ত তালগুলির আরো অনেক রকমের তৎকার হয়—ঘরাণার বিভিন্নতা অনুসারে।
আরও দেখুনঃ