আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – উভয় ধরনকে অতিক্রমণ সূচনা নাচ।যা “সারা বিশ্ব জুড়ে নাচ” খন্ডের অন্তর্ভুক্ত।
উভয় ধরনকে অতিক্রমণ সূচনা নাচ
সূচনা-নাচ বালকদের মধ্যম ধরনের অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মনিল্লাহ এবং পদাঘাত নাচের গঠনশৈলী ধারণ করে। অনেক গোপনসমাজের ধর্মীয় আচারে এবং বালকদের সূচনাতে প্রধান অংশ হিসাবে আত্মনিগ্রহতা তাদের পরিচিত। ইউরোপীয়ান পর্যবেক্ষক দ্বারা গ্রহণযোগ্য হবার পূর্ব পরীক্ষায় তাদের অধিকাংশ রূপান্তরিত হয়েছে মানবজাতির সম্পদে যে শ্রেণীতে অস্ত্রের সঙ্গে সাহস ও নৈপুণ্য অত্যাবশ্যক।
কিন্তু এটা শুধুমাত্র অর্ধেক সতা হতে পারে এবং নিশ্চিত ভাবে এগুলি প্রয়োগের মৌলিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে না। সেই জন্য সূচনার ধর্মীয় আচারের বাইরে আমরা সেই একই প্রথা দেখতে পাই। শাচনার আরুকগণ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার নাচে একে অপরকে চাবুক দিয়ে মারে যতক্ষণ না রক্তঝরে এবং সাইবেরিয়ার কাইয়া অপ্রোক্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান থেকে ফিরে দুই দন্ডের মাঝখানে হেঁটে যায় এবং পুরোহিত তাদের মারতে পারে কারণস্বরূপ মৃতের আত্মা তাদের বয়ে নিয়ে যেতে না পারে।
সেইমত এটা মনে হয় ব্যাখ্যার অযোগ্য যে, আত্মনিগ্রহ-নাচ এই সকল প্রথার কারণে শয়তানের (অপদেবতা) বিরুদ্ধে যেমন প্রতিরোধ, যেটা সত্যিকার অর্থেই বিশেষভাবে জীবনের এক স্তর থেকে অন্য স্তরে উত্তরণের অজানা ভীতি।যখন দক্ষিণ-অস্ট্রেলিয়ায় আত্ম-শাস্তি বৃষ্টি-যাদুমন্ত্রের আওতাভুক্ত, এটা পরিষ্কার যে, আমার এটার জন্য না, অথবা কমপক্ষে হয় না শুধু প্রতিরোধ কিন্তু শুধু একটা ঈশ্বর প্রদত্ত আহবানের সামাধানের তাৎপর্য বহন করে।
এখানে যেমন সূচনায় এবং অন্তোষ্টিক্রিয়াতে অর্থ করে জীবনের দন্ড নিয়ে যাদুকে পবিত্রকরা যার আঘাত থেকে উর্বরতা ও শক্তি আবাহন হয় এবং বিকল্প ক্রিয়ায় মৃত্যু ঘটে। আমাদের বিবেচনায় এটা এখন পার হয়ে আছে যে, অপমৃত্যুর ঘোষণা দেবার প্রচলন বাড়ীর দরজার লাঠির আঘাত করা এবং শবযান চালক চাবুকের পরিবর্তে পারিসকে বহন করে।
বেত্রাঘাতের আচার অপ্রত্যক্ষভাবে ধর্মীয় পদ্ধতির ভূমিকায় কাঁধে তরবারি স্পর্শ করে নাইট উপাধি প্রদানের পদ্ধতি সংরক্ষিত করেছে এবং রিচার্ড ওরেগনার্স এর মিষ্টারসিংগারে কানে চপেটাঘাত করে শিক্ষানবীশকে দলে অন্তর্ভূক্ত করার পদ্ধতি বিস্তৃতি হতে রক্ষা করেছে। কিন্তু সেন্ট নিকোলাস বা সান্তা ক্লজের অবলম্বনের দন্ড আমাদের সময়ে প্রত্যক্ষভাবে প্রচলিত আছে তবে আমিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ছাড়া না ।
নিউ বৃটেনের ব্লাকদের মধ্যে একজন নাচুয়ে বুড়া মানুষের মুখোশ পরে শোভাযাত্রা সহকারে বিভিৎস চিৎকারে লাঠি ঘুরাতে ঘুরাতে বাড়ী বাড়ী ঘুরে। “বুড়া লোকটা” উবু হয়ে বসে, তারপর আবার লাফ দেয় এবং নাচে। যেহেতু সে আসনদিতি হয়ে বসা, জনগণ তাদের শিশুদের তার কাছে ঠেলে দেয় যাতে তারা তার সহচর্বে উন্নতি লাভ করতে পারে।
কিন্তু বয়স্করা সোজা দাঁড়ায়ে থাকে এবং তাদেরকে বেত্রাঘাত করতে দেয় যাতে রার শক্তিশালী হতে পারে। দক্ষিণ সাগরে পান্না রুক্ষ। এইরূপ এটা পরিষ্কার হয়ে উঠে যেন ক্যালিফোর্ণিয়ার কর জীবন তবে উৎসব পালন করে, ধরে রাখা আবৃত আবরণের নিচে নতুন বয়লার মেয়ে শুয়ে থাকে সঙ্গে একটা দন্ড যেটা নঘটা ভাগে বিভক্ত, ভালাযারের সঙ্গে একই সময়ে নাচে।
হোসেনের সূচনা নাচো করার একটা ধারণা আছে যেমনটা কাইয়াকগণ অন্ত্যেষ্টিয়া উৎসব পালন করে। নিউগিনির পর পাপুযাগণ একজনের পিছনে আর একজন পা ছড়ায়ে লাইন করে পাড়ার এবং তাদের বল্লম এক পাইনে বাসে একটা অপরটার আমার হয়ে থাকে। ছেলেদের অবশ্যই এই লাইনের মধ্য দিয়ে তিনবার যেতে হবে এবং তাদেরকে শিং এর সভাষা হবে।
এই রকম একই ধরণের চিত্র নিউগিনির নিকট তামি হে বাধালীদের মধ্যে, হিন্দুস্থানের ভাইমেনের মধ্যে দেখি । বয়স্কদের দুই লাইনের মধ্য দিয়ে হাত পারো হামা দিয়ে শিক্ষানবীশ যাবে এবং পনার আমার যা হবে। এ প্রাপ্ত মেয়েদের অবশ্যই বের হবার রাস্তার জন্য শক্তি প্রয়োগ করতে হবে বিষমকোণী চতুর্ভূজের মধ্য থেকে যেখানে একজন বৃদ্ধ পা ছড়ায়ে একপাশে পারি কাছে যেটা মাটি এবং বে কেন্দ্রস্থল বিভক্ত।
অবাক করে এই পদ্ধতির কোটা যেমন ক্যামেরুনের প্যাঙ্গাউদের বুড়া লোক লাইন করা হাত পা বাইরের দিকে ছড়ান শিক্ষানবীশদের মধ্য দিয়ে নাচতে নাচতে যায়। হামাগুঁড়ি দিয়ে চলার অর্থ সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়া : কুমীর নাচ, উত্তর-অস্ট্রেলিয়ার যারা কুমীরের পূর্ব-পুরুষের প্রতিনিধিত্বকারী সে সব জনগোষ্ঠীর লোকজন পায়ের নিচ দিয়ে হামাগুঁড়ি দিয়ে যায় এবং মরক্কোতে ভাল স্ত্রী হবার জন্য বৌ বরের দু’পায়ের মধ্য দিয়ে হামাগুঁড়ি খায় ।
শিক্ষানবীশদের প্রজনন ক্ষমতা আনার জন্য বলতে গেলে একই স্তরের বা লেভেলের প্রথা যেটা যৌনক্রিয়ার প্রতিকারূপে কাজ করে। অতি বিস্তৃত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্বামী-স্ত্রী রূপে বসবাসের প্রতীক মাটিতে পদাঘাত, যেটা আমরা ইউটোটোদের উদাহরণের মধ্যে দেখেছি।

সুতরাং মানুষের একত্রে বসবাসের মধ্যে স্পেশাল পদাঘাত-নাচ যথার্থ স্থানের যেখানে যেখানে চিহ্নিত করা আছে সেখানে থেকে নেওয়া যাবে। পাপুয়া এবং ক্যালিফোর্ণিয়ার কুকছুদের গোপন-সমাজের মধ্যে পুরুষাঙ্গের প্রতীকরূপে মোটা গাছের গুঁড়ির উপরে দুইদিকে কাটা ডালকে গণ্য করা হয়।
যেমন জলন্ত বালিকাদের সূচনা নাচ প্যারাগুয়ের গ্রান চাকোদের একটা কল্পনাহীন বৃত্তনাচ কেমন করে মুখাভিনয় হয়ে উঠে তার চমৎকার বিশদ বিবরণ আছে ঃ পূর্ববর্তী বিভাগ (অধ্যায়ে) যেমন করে কল্পনাহীন নাচের বর্ণনায় আছে মহিলাগণ নাচের বৃত্তে যুবতী মেয়েদের ঘিরে রাখে যাতে অপশক্তি তাদের আক্রমণ করতে না পারে।
কিন্তু এখানে অপশক্তি কাল্পনিক না, মুখোশ পরা ছেলেরা অনুকরণাত্মক ভঙ্গিতে তাদের প্রতিনিধিত্ব করে, তারা আকৃষ্ট হয়, তারপর প্রতিহত করা হয় আগুনের দন্ডরূপে আগুনের শিখারে সরায়ে না দিয়ে এটাকে ধারণ করা হয় এবং নির্বিঘ্নে পুনরায় উৎপাদন করা হয়।
এটাকি সেই একই মূলশিল্প উপাদানের পুনরাবৃত্তি যেমন কালাহারি মরুভূমির বুশম্যানগণ অপশক্তিকে চিত্রিত করে যৌনউত্তেজিত জন্তুদের মত এবং পটভূমি উপরে উল্লেখিতের মত সাদৃশ্যময় নাচ ব্যবহৃত হয় উর্বরা ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রথায়? “বৃদ্ধ মহিলা এক জায়গায় দাঁড়ায়ে সম্পূর্ণ দলকে সাজায় বা কম্পোজ করে বা ফরমেশন ঠিক করে; যেমন তারা গান গায়, তালি দেয় এবং লোহার লাঠি খট্ খট্ করে।
যুবতী মেয়ে মাটিতে তাদের পায়ের উপর ভর দিয়ে উবু হয়ে শুয়ে থাকে। আর একটু অল্প বয়স্ক বিবাহিত মহিলাগণ এক লাইনে হেঁটে চারের মত ফরমেশন করে যুবতীটিকে ঘিরে রাখে, বাজনার সঙ্গে তাল মিলায়ে পদাঘাত করতে থাকে এবং তাদের বাইরের দিকে ছড়ান বাহুদ্বয় ছন্দে ছন্দে উপর নিচ করে।
তারা ছিনালিপনা করে এবং অনাবৃত পাছা দৃষ্টি আকর্ষণ করায় এইভাবে যেমন হটেনটটদের মত বহুল পরিমানে উন্নত। এইরূপে নাচ কিছুক্ষণের জন্য চলতে থাকে, তারপর হঠাৎ একজন বুশম্যান আস্তে আস্তে এগিয়ে আসে, সেইমত পা মারে বাজনার ছন্দে ছন্দে এবং উপরের বাহুদ্বয় তালে তালে নাড়ে এবং ঘুষি পাকায় ।
তার মাথায় এক জোড়া শিং এবং একটুকড়া চামড়া বাঁধা। সম্ভবতঃ শিংদ্বয় প্রকৃত দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণসারের। কিন্তু আমাদের বুশম্যান তার কপালে কাঠের বাঁকান প্রায় এক আঙ্গুল লম্বা শিং বেঁধেছে এবং কয়লা দিয়ে কালো রং করে তার সঙ্গে যোগ করেছে ছাগলের এক টুকরা চামড়া ।
শিং লাগান বুশম্যান ষাঁড়, নারীগণ গরুর ভূমিকায় যে সম্পর্ক দাঁড়ায় তা খুবই স্পষ্ট। ষাঁড় অগ্রসর হয় গরুগুলি ঘিরে কয়েকবার চক্কর খায়, গরুগুলি পদাঘাত করে এবং ছিনালিপনা করতে থাকে। হঠাৎ সে একজন মহিলার পিছন থেকে লাফ দেয় এবং তাকে তার সঙ্গে বহন করে নিয়ে যায়। ষাঁড় ও গরুর গতিবিধি তখন এত উত্তেজনাকর যে কেউ তৎক্ষণাৎ উপলদ্ধি করবে তারা প্রকৃত জন্তুর মত যৌন উত্তেজিত।
এইরূপে শোভাযাত্রা সামনে পিছনে কিছুক্ষণ চলে সঙ্গে ষাঁড়টি নাচুয়েদের মধ্যে ভিতরে বাইরে বিদ্ধ করে। চূড়ান্তপর্বে বাজনা থেমে যায় এবং হাসি ঠাট্টার মধ্যে ভেঙ্গে যায় কিন্তু একটু পরে বিরতি দিয়ে আবার খেলা শুরু হয়”।
আমি সম্পূর্ন নিশ্চিত হয়েছি কিছুদিন পূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা এবং লিও ফ্রেবেনিয়াস দ্বারা প্রদর্শিত সেই একই কম নাচের ছবি পাথরের গাত্রে চিত্রিত করা আছে। এটাতেও ছিল সেই একই আকৃতির চার ফরমেশন এক ব্যক্তি বৃত্তগুলির একটাতে শুয়ে আছে; মহিলাগণ নগ্ন এবং পুরুষেরা জন্তুর পোষাক পরে আছে।
আরও দেখুনঃ