রাগ পরিচিতি

 আজকে আমরা রাগ পরিচিতি সম্পর্কে আলোচনা করবো।

 

রাগ পরিচিতি

 

রাগ পরিচিতি

১ । রাগ- বিলাওল

ঠাট বিলাওল। বিলাওঅল ঠাটের স্বরূপ : সা র গ ম প ধ ন । প্রকৃতি শান্ত। জাতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ। বাদী ধ, সংবাদী গ। উত্তরাঙ্গ- বাদী রাগ। পরিবেশনের সময় দিন প্রথম প্রহর (৫–১টা ) এটিকে দিনের বেলার কল্যাণও বলা হয়। গ ও নি বরুভাবে লাগে । আরোহ—সা, রে, গ, ম, প, ধ, নি সা । অবরোহ—সা নি ধ, প, মগ, রে, সा । পকড়গম রে, গপ, ধ, নিসা। ন্যাস স্বর—রে, গ, প ও ধ।

২ । রাগ—বেহাগ

ঠাট বিলাওঅল। প্রকৃতি গম্ভীর। জাতি ঔড়ব-সম্পূর্ণ। আরোহে রে ও ধ বর্জিত। একে বিহাগ-ও বলেন অনেকে। বাদী গ, সংবাদী নি । পূর্বাঙ্গের রাগ। পরিবেশনের সময় রাত দ্বিতীয় প্রহর (১–১২ )। দাই মধ্যমও ব্যবহার করা হয়। রে ও ধ দুর্বল। আরোহে সাগ, ম প, নি, সা। অবরোহ—সা, নি, ধপ, মগ, রে সা । পড়— নি, সা, গ, ম প গ ম গ । ন্যাস স্বর—গ, প ও নি

 

রাগ পরিচিতি

 

৩ । রাগ—ইমন

ঠাট কল্যাণ। কল্যাণ ঠাটের স্বরূপে ঃ সা রে গ ম প ধ নি। প্রকৃতি শান্ত । জাতি সম্পর্ণে-সম্পূর্ণ। বাদীগ, সংবাদী নি । পূর্বাঙ্গের রাগ। পরিবেশনের সময় রাত প্রথম প্রহর ( ৬—১টা)। একে অনেকে কল্যাণ বা ইমন কল্যাণও বলেন— যদিও তা ঠিক নয়। কারণ কল্যাণ ও ইমনকল্যাণ অন্য দুটি পৃথক বৈশিষ্ট্যের রাগ। আরোহ—সা রে, গ, ম, প, ধ, নি, সা । অবরোহ—সা, নি, ধ, প, ম, গ, রে, সা। পকড়-নি রে গ. রে, নি রে মা। ন্যাম স্বর—রে, গ ও প।

৪ । রাগ—খমাজ

ঠাট খমাজ ৷ এমাজ ঠাটের স্বরূপ : সা রে গ ম প ধ নি। একে বাজ-ও বলা হয়। প্রকৃতি চঞ্চল। জাতি ধাড়ব-সম্পূর্ণ। আরোহে রে বর্ণিত। বাদী সংবাদ নি। পূর্বাঙ্গের রাগ। পরিবেশনের সময় রাত দ্বিতীয় প্রহর (১–১২টা)। এতে দুই নিষাদই ব্যবহৃত হয়। আরোহের সময় শখ এবং অবরোহের সময় কোমল নি। আরোহ—সা, গ, ম, প, ধনি সা। অবরোহ স ন ধ প ম গ রে সা । পকড় নি, ধ, ম প ধ ম গ । ন্যাস স্বর—গ, প ও ধ।

৫। রাগ – তিলং

ঠাট খমাজ। প্রকৃতি চঞ্চল। জাতি ঔড়ব-ঔড়ব । রে ও ধ বর্জিত। দুই নিষাদই ব্যবহৃত হয়। আরোহে শঙ্খে ও অবরোহে কোমল নি । বাদী গ, সংবাদী নি। পূর্বাঙ্গের রাগ। পরিবেশনের সময় রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর । কোন-কোন গুণীরা অবরোহে অল্প পরিমাণে রে স্বরটি প্রয়োগ করেন। নি-প স্বর সঙ্গতি রাগ-বাচক। নিপ, গ ম গ—স্বর সমষ্টি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। আরোহ – সা গমপ নি । অবরোহ—সা, ি প, মগ, সা। পকড়—নি প, গ ম গ । ন্যাস স্বর—গ ও প ৷

 

রাগ পরিচিতি

 

৬ । রাগ—ঝিঝিট (বা ঝিনঝোটি )

ঠাট খমাজ। প্রকৃতি ক্ষুদ্র জাতি সম্পূর্ণ’ । আরোহে সব স্বর শুে অবরোহে কোমল নি। অল্প পরিমাণে কোমল গান্ধারও প্রয়োগ করেন অনেকে। একে ঝিন ঝোটিও বলা হয়। বাদীগ, সংবাদী নি। পূর্বাঙ্গের রাগ। পরিবেশনের সময় রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর । আরোহ সা রে গ প নি । অবরোহ – সা নি ধ প ম গ রে গ, সা পড়—ধু মা রে মগ। ন্যাসম্বর কোন মতে সা, গ ও প। ভিন্ন মতে সা, গ, ম, প ও ধ।

৭ । রাগ—গারা

ঠাট খমাজ। জাতি সম্পূর্ণ’। প্রকৃতি ক্ষুদ্র। দুই ও দই নি ব্যবহৃত হয়। বাদী গ, সংবাদী নি। পূর্বাঙ্গের রাগ। পরিবেশনের সময় দিবা দ্বিতীয় প্রহর। আরোহ – সা রে গ রে, গ ম প ধ, নি, সা। অবরোহ সা নি ধ নি প ম গ রে গ রে সা । পকড়—রে গ রে সা, ধ নি প নি সা, গ ম রে গ রে সা।

৮ । রাগ—কাফী

ঠাট কাফী। কাফী ঠাটের স্বরূপ : সা রে গ ম প ধ নি। প্রকৃতি- চঞ্চল। জাতি সম্পর্ণে-সম্পূর্ণ। বাদী প, সংবাদী সা। উত্তরাঙ্গের রাগ । পরিবেশনের সময় মধ্যরাত্রি ( রাত ৩য় প্রহর — ১২-৩টে ) । এর আরোহ অবরোহে প্রধানত কোমল গ ও নি-ই লাগে । তবে গানের সময় কেবল আরোহ গতিতে শঙ্খে গ ও শূদ্ধে নিও লাগানো যেতে পারে। আরোহ সা, রে, গ্র, ম, প, ধনি সা। অবরোহ – সা নি ধ, প, ম গ, রে সা । পকড়—সাসা রেরে, গগ, মম, প ৷ ন্যাস স্বর—রে, গ, ম ও প

 

রাগ পরিচিতি

 

৯ । রাগ—পীলু

ঠাট কাফী। ক্ষুদ্র প্রকৃতির রাগ। জাতি সম্পূর্ণ। ভৈরবীর মতো এতেও সপ্তকের বারোটি স্বরই ব্যবহার করা হয়। বাদীগ, সংবাদী নি। পূর্বাঙ্গের রাগ। পরিবেশনের সময় দিবা তৃতীয় প্রহর। আরোহ –নি সা গু, রে গ, ম প, ধ্রুপ, নি ধ প, সা। অবরোহ— সা নি ধ প ম গ্র, নি । পকড়—নি সা গু, नি । ন্যাস স্বর—গ্র ও প ৷

১০ । রাগ – বাহার

ঠোঁট কাফী। প্রকৃতি চঞ্চল। জাতি ষাড়ব ঘাড়ব। আরোহে রে, অবরোহে ধ বর্জিত। বাদী ম. সংবাদী সা। মতান্তরে সা. ম ও দুই নিয়াদই ব্যবহৃত হয়। সাধারণত আরোহে শঙ্খ এবং অবরোহে কোমল নি প্রয়োগ করা হয়, তবে কখনো-কখনো মন্ত্র সপ্তকে আারোহ গতিতেও কোমল নি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বরজাতির উত্তরাঙ্গবাদী রাগ। পরিবেশনের সময় মধ্যরাত্রি। আরোহ—সা গ্রম, প ম, নি ধনি সা। অবরোহ—সাঁ, নিপ মাপ, গ্র ম, রেসা। কোন-কোন মতে আরোহ এই ভাবেও করা হয়সা, মপগ্র ম নি ধনি সা। পকড় — ম প গ্রম, ধ, নি । ন্যাস স্বরमা, ম ও প ৷

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

১১ ৷ রাগ—ভৈরবী

ঠাট ভৈরবী। ভৈরবী ঠাটের স্বরূপঃ সা রে গ্র ম প ধ নি । প্রকৃতি চঞ্চল । জাতি সম্পর্ণে-সম্পর্ণে’ । বাদী ম, সংবাদী गा । উত্তরাঙ্গের রাগ। পরিবেশনের সময় দিন প্রথম প্রহর (৬–১)। তবে শিল্পীরা আজকাল রাত ১২টা থেকে দিন ১২টার মধ্যে যে কোন সময় পরিবেশন করে থাকেন। তাছাড়া, যদিও শাস্ত্রমতে রেগধ ও নিস্বর ক’টি কোমল ও অবশিষ্ট স্বরগুলি শুদ্ধ লাগানোর কথা, কিন্তু আজকাল সপ্তকের বারোটি স্বরই মান্সিয়ানার সঙ্গে ব্যবহার ক’রে থাকেন। আরোহ—সা, রে গ ম, প ধ, নি সা। অবরোহ—সা, নি ধ প, ম গ, রে সা। পকড়— ম, গ, সা রে সা, ধ নি সা। ন্যাস স্বর গ, ম ও পা

১২ । রাগ – বসন্ত

ঠাট পূর্বেী। পূর্বেী ঠাটের স্বরূপে সা রে গ ম প ধ নি। প্রকৃতি গম্ভীর। রে ও ধ কোমল, উভয় মধ্যম এবং অবশিষ্ট স্বর শঙ্খে। জাতি— সম্পূর্ণ। বাদী তার সপ্তকের সা. সংবাদী প। উত্তরাঙ্গের প্রাতঃকালীন সন্ধিপ্রকাশ রাগ । বসন্ত ঋতুর রাগ তাই বসন্তকালে যে কোন সময় পরিবেশন করা চলে কিন্তু ভিন্ন ঋতুতে সময় হ’ল রাত্রি শেষ প্রহর । আরোহ—সা গ, ম ধ, রে, সা। অবরোহ—রে নি ধ, প, ম গ, ম -গ, ম ধ ম গ, রে সা। পকড়—ম ধ, রে নি ধ, প, ম গ, ম -গ। ন্যাস স্বর—রে, গ, প, ধ ও সা।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment